গরুর ভুঁড়ি খেতে কে না পছন্দ করেন। বিশেষ করে গরুর বট ভুনার স্বাদ সবার মুখেই লেগে থাকে। শুধু বাংলাদেশেই নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানেও বিভিন্ন প্রাণীর বট বেশ জনপ্রিয়। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার কিছু অংশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে গরু-খাসি’সহ বিভিন্ন প্রাণীর ভুঁড়ি আছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, গরু-খাসির ভুঁড়ি পরিমিত খেলে শারীরে মেলে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, নিয়াসিন, কোলিন, জিংকসহ সেলেনিয়াম।
বিজ্ঞাপন
গবেষণায় দেখা গেছে, সেলেনিয়াম শরীরের সংকেত ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত সেলেনিয়াম রাখলে হৃদরোগ, বন্ধ্যাত্ব ও আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি কমানো যায়।
গরুর ভুঁড়ি ভুনার রেসিপি
উপকরণ
১. ভুড়ি দেড় কেজি
২. তেল পৌনে ১ কাপ
৩. পেঁয়াজ ২ কাপ
৪. আদা/রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ
৫. গরম মশলার গুঁড়ো ১ চা চামচ
৬. হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
৭. মরিচ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
৮. ধনে গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
৯. জিরা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
১০. শুকনো বা কাঁচা মরিচ ৪-৫টি
১১. পানি ২ কাপ
১২. লবণ স্বাদমতো
পদ্ধতি
প্রথমে গরুর ভুড়ি ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর একটি প্যানে তেল গরম করে নিতে হবে। মাঝারি আঁচে পেঁয়াজ, আদা-রসুন বাটা দিয়ে সামান্য কষিয়ে নিন।
তারপর একটু পানি দিয়ে নেড়ে একেক করে সব গুঁড়ো মশলাসহ লবণ মিশিয়ে নিন। তারপর ভালো করে নেড়ে হালকা আঁচে ঢেকে কষিয়ে নিতে হবে।
মশলা ভালো করে কষানো হলে, এর মাঝে পরিষ্কার করে রাখা বট বা ভুড়ি দিয়ে ৫-৬ মিনিট বারবার নেড়েচেড়ে কষিয়ে নিন। এরপর ২ কাপ পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে ডেকে রান্না করুন।
কিছুক্ষণ পরপর ঢাকনা উঠিয়ে নেড়ে দিন, যাতে নিচে লেগে না যায়। পানি শুকিয়ে গেলে টালা জিড়া গুঁড়ো ও সামান্য গরম মশলার গুঁড়ো উপরে ছড়িয়ে ভালো করে নেড়ে নিন।
যদি আপনি ভুড়ি ভুনায় সামান্য ঝোল বা গ্রেভি রাখতে চান তাহলে এ পর্যায়ে সামান্য গরম পানি মিশিয়ে দিন। ৫ মিনিট চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন।
আর যদি ভাজা ভাজ করতে চান; তাহলে চুলার আঁচ কমিয়ে আরও ৭-৮ মিনিট ভেজে নিন। এ পর্যায়ে দেখবে ভুড়ি ভুনা অনেকটা কালো হতে শুরু করেছে।
তারপর নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মজাদার ভুড়ি ভুনা। ভাত, রুটি, পরোটা দিয়ে দারুন মানিয়ে যায় মুখোরোচক এই পদটি।
গরুর ভুঁড়িতে আছে যত স্বাস্থ্য উপকারিতা-
হাড় ও পেশি শক্তিশালী করে
ভুঁড়ি চর্বিহীন প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। এটি আপনার পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখে। এমনকি শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামত করতে ও পেশি তৈরিতে সাহায্য করে। তিন-আউন্স সমপরিমাণ রান্না করা গরুর ভুঁড়িতে থাকে ১০ গ্রাম প্রোটিন, যা দৈনিক গড় চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ।
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে
গরুর ভুঁড়িতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১২ থাকে, যা রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। শরীরে রক্তাল্পতা হলে অঙ্গগুলোতে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য পর্যাপ্ত লোহিত রক্তকণিকা থাকে না।
এর ফলে দুর্বলতা ও ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন বি-১২ আছে এমন খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এ সমস্যা রোধ করা যায়।
ওজন কমায়
উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে ওজন কমানো ও নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। প্রণীজ প্রোটিনের তুলনায় গরু-খাসির ভুঁটিতে ক্যালোরি ও চর্বি কম থাকে। ফলে ওজন কমে দ্রুত।
অপকারিতাও আছে
গরুর ভুঁড়ি পরিমিত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে অতিরিক্ত খেলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার মধ্যে উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা অন্যতম। অন্যান্য কাটা মাংসের তুলনায় গরুর ভুঁড়িতে কোলেস্টেরল বেশি থাকে।
তিন-আউন্স পরিবেশনে ১০৮ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল থাকতে পারে। তাই আপনার যদি উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে, তাহলে ডায়েটে এই খাবার রাখার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এছাড়া গরুর ভুঁড়ি অনেকটাই রাবারি টেক্সচারের হওয়ায় মুখে নিয়ে বেশিক্ষণ চিবিয়ে খেতে হয়। ফলে যাদের মুখের ভেতরে বা দাঁতের সমস্যা আছে, তাদের মুখের স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে এই খাবার।
আজ গরুর ভুঁড়ি খাওয়ার দিন!
আজ ওয়ার্ল্ড ট্রিপ ডে (ভুঁড়ি বা বট দিবস)। ট্রিপ হলো গবাদি পশু, গরু, ছাগল, ভেড়া বা শূকরের মতো প্রাণীদের পেটের আস্তরণ। এক সময় এই খাবার শুধু নিম্নবিত্তরাই খেত। এখন সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই ব্যাপক জনপ্রিয়।
ওয়ার্ল্ড ট্রিপ ডে ‘ট্রিপ মার্কেটিং’ বোর্ডের উদ্যোগে চালু হয়। যুক্তরাজ্যের একটি প্রকাশনা হাউস ট্রিপ খেতে সবাইকে উৎসাহিত করতেই এই উদ্ভট উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই দিবস পালিত হয়। তারা গবাদি পশুর ভুঁড়ির নানা মুখোরোচক পদ তৈরি করে পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করেন।
top of page
800.00৳Price
1 Kilogram
No Reviews YetShare your thoughts.
Be the first to leave a review.
bottom of page